শরিয়ত আইন কী?

শারিয়াহ হলো আল্লাহর আইন। কুরআন ও হাদিসের ওপর ভিত্তি করে শারিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠিত। শরিয়াহর মূলত দুটি উৎস আছে একটি হলো ইজমা ও আরেকটি কিয়াস। তবে ইজমা ও কিয়াসও কুরআন-হাদিসের মূলনীতির ওপরেই হতে হবে।

পৃথিবীতে হাতেগোনা কিছু মুসলিম দেশে আংশিক শরিয়াহ আইনের চর্চা আছে। তবে কোথাও পূর্ণাংগ শরিয়াহ আইন প্রয়োগ করে না।

এসিড নিক্ষেপকারীর শাস্তি ?

যদি কোনো অপরাধী এসিড দ্বারা কোনো ব্যক্তির মিত্তু ঘটান তাহলে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম অথবা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং এক লক্ষ তাকে জরিমানা হবে।

যদি কোনো অপরাধী এসিড নিক্ষেপ করে কোনো ব্যক্তিকে আহত করে এবং অঙ্গহানি করে তাহলে তাকে যাবজ্জীবন বা সাত বছরের সশ্রম অথবা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা হবে।

যদি কোনো অপরাধী এসিড নিক্ষেপ করার চেষ্টা করে তাহলে তার তিন বছরের সশ্রম অথবা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা হবে।

এছাড়া, আপনি দন্ডবিধি ৩২৬-ক ধারায় এসিড নিক্ষেপ নিয়ে সকল আইনের ধারা লিখা আছে।

বাংলাদেশে বর্তমান আইনে অপহরণের শাস্তি কী ?

অপহরণ বলতে কিডনাপ বা এবডাকশন বোঝায়।

অপহরণের শাস্তি মূলত অপহরণের উদেশ্যের উপর ভিত্তি করে। ৩৬৩ নং ধারা অনুযায়ী সাধারণ অপহরণের শাস্তি সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা।

আবার যদি মার্ডারের উদ্দেশ্যে অপহরণ করা হয় তাহলে (৩৬৪ নং ধারা অনুযায়ী)যাবজ্জীবন বা দশবছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড হতে পারে।

আটকে রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ করলে সাত বছর পর্যন্ত (৩৬৫ নং ধারা অনুযায়ী), কোন মহিলাকে জোর পূর্বক বিয়ে বা সেক্সের জন্য অপহরণ হলে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে (৩৬৬ নং ধারা অনুযায়ী)।

এরকম আরো বহু ধরনের অপহরণ আছে এবং প্রত্যেকের আলাদা শাস্তি আছে। সবগুলো দেখে নিন বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৫৯-৩৭৪ নং ধারা পযন্ত।

মামলায় সাক্ষ্য দানকারী ভুয়া সাক্ষ্য দিলে বাংলাদেশের আইন অনুসারে কি শাস্তি হওয়ার কোনো বিধান আছে নাকি ?

যদি কোনো ব্যক্তি আদালতে শপথ নেওয়া সত্ত্বেও এমন কথা বলে, যা মিথ্যা এবং সে সত্য বলে বিশ্বাস করে বা করে না, তবে উক্ত ব্যক্তি মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে বলে পরিগণিত হয়।

শাস্তি: কোনো ব্যক্তি যদি কোনো বিচার বিভাগীয় কার্যক্রমের যেকোনো পর্যায়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়, তবে সে ব্যক্তির ৭ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

প্রাইভেট গাড়িতে কালো গ্লাস পেপার লাগালে কি কোনো আইনি সমস্যায় পড়বো নাকি ?

বাংলাদেশের আইনে কিছুদিন আগে গাড়িতে কালো গ্লাস ব্যবহার এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এরপরও যদি আপনি কালো গ্লাস পেপার ব্যবহার করেন তাহলে আপনাকে ট্রাফিক পুলিশ অথবা সার্জেন্ট এর কাছ থেকে জরিমানা বা মামলা খাবেন। তাই কালো গ্লাস পেপার ব্যবহা করা থেকে দূরে থাকুন।

ট্রাফিক আইন মেনে চলার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের এতো অনীহা কেন ?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা জানি আইন না মানলেই সুবিধা। একটা ছোট ক্রসিং করার জন্য একটা যানকে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয় আবার একজন পথচারীকে দোতলা সমান ওভারব্রিজে উঠতে-নামতে হয়। বেআইনিভাবে রাস্তা পার হলে তাদের কষ্ট অনেক কমে যায়। এছাড়া, কিছু চিরায়ত কারণে ট্রাফিক আইন মানতে চাই না, যা নিম্নে তুলে ধরা হলো-

  • অভ্যাস না থাকা।
  • দ্রুত সুবিধা লাভ করার আশায়।
  • ট্রাফিক আইন সমন্ধে জ্ঞানের অভাব।

১৮ বছরের নিচের মেয়েকে নিয়ে যদি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে থাকে, তবে তার বৈধতা কতটুকু ?

এই বিষয়ে আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরছি এবং আরো কিছু আইনি বিষয় তুলে ধরছি যাতে আপনি ভালোভাবে বুঝতে পারেন।

18 বছর বয়সের বা তার নিচের কোন মেয়েকে যদি কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে পালিয়ে নিয়ে যায় তাহলে সেটা হবে অপহরণের অপরাধ। যদি বিয়ে করে তাহলে বাল্যবিবাহের অপরাধ। 18 বছরের নিচের কোন মেয়েকে যদি তার ইচ্ছাতেও যৌন সঙ্গম করা হয় তাহলে সেটা ধর্ষণ। এখানে সরকার সত্যপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করতে পারে, এছাড়া কেউ অভিযোগ না জানালেও এই ঘটনায় পুলিশ অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

আইন অনুযায়ী কোনো মুসলিম ছেলে কি কোনো হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে ?

ধর্মীয় আইন অনুসারে পারবে না, কিন্তু রাষ্ট্রীয় আইন Special Marriages Act,1872 অনুযায়ী কোর্টে ১৪ দিন আগে application ফাইল করে বিয়ে করতে পারবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আরো কিছু আনুসাঙ্গিক বিষয় সম্পন্ন করতে হবে যা নিম্নে দেওয়া হলো-

  • পাত্র ও পাত্রীকে অবিবাহিত থাকতে হবে।
  • ছেলের বয়স ২১ বছর এবং মেয়ের বয়স ১৮ বছর হতে হবে।
  • জেলা নিবন্ধকের কাছে ১৪ দিন আগে নোটিশ দিতে হবে এবং নোটিশ দেওয়ার ১৪ দিন পর বিয়ে সম্পাদন করতে হবে।যে জেলার নিবন্ধক বরাবর নোটিশ প্রদান করবেন, নোটিশ প্রদানকারীকে অবশ্যই নোটিশ দেওয়ার কমপক্ষে ১৪ দিন আগে থেকে সেখানে বসবাস করতে হবে।
  • পাত্রপাত্রী সশরীরে উপস্থিত থেকে বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে এবং আইনজীবীর তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতকৃত হলফনামায় পাত্র-পাত্রী স্বাক্ষরদানের পর ওই হলফনামা নোটারি পাবলিক কর্তৃক ‘নোটরাইজড’ করতে হবে।
  • প্রস্তুতকৃত হলফনামায় অবশ্যই ‘বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে’ শব্দগুলো লিখতে হবে।
  • বিয়ের সময় অন্তত তিনজন সাক্ষী উপস্থিত থাকতে হবে।
  • বিয়েটি অবশ্যই রেজিস্ট্রারের উপস্থিতিতে সম্পন্ন করতে হবে এবং তা সরকারি খাতায় নিবন্ধন করতে হবে।

তাহলে আপনার বিবাহ সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন হবে।

বাংলাদেশ আইন নিয়ে সবচেয়ে ভালো সফটওয়্যার কোনটি ?

“All laws of Bangladesh” অ্যাপটি আমার কাছে সবচেয়ে ভালো বলে মনে হয়েছে। এটি অফলাইনে পড়া যায়। এবং আইনের ধারা এ এক সফটওয়্যারেই পাওয়া যায়।

পুলিশ ভেরিফিকেশন কী?

পুলিশ ভেরিফিকেশন হচ্ছে, একজন মানুষের প্রাক পরিচয় যাচাই! উক্ত ব্যক্তির নামে কোন ধরনের ক্রিমিনাল মামলা আছে কিনা,সে রাষ্ট্র দ্রোহী,সরকার বিরধী কোন কোন কার্যক্রম এর সাথে জড়িত কিনা বা কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের এর আওতাভূক্ত কিনা এবং সাপোর্টিং পেপার্স ঠিক আছে কিনা।তা তদন্ত করে থানায় এর রিপোর্ট জমা দেওয়া।