ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বারদী লোকনাথ আশ্রম কেমন ?

ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য শ্রী শ্রী লোকনাথ বারদী লোকনাথ আশ্রম আদর্শ জায়গা। কারণ, এই খানে ধর্ম-বর্ণ-জাতি বিভেদ বলতে কিছু নেই, এই জায়গা তে সকল মানুষ সমান, সকল মানুষের মিলন মেলা। ১৮৬৩ সালে লোকনাথ ব্রহ্মচারী বারদী গ্রামে নিবিড় পরিচর্যায় এই আশ্রম গড় তুলেন। বর্তমানে প্রতিদিন অনেক মানুষ এইখানে ভিড় করে।

ঢাকার গুলিস্থান থেকে বোরাক, দোয়েল বা স্বদেশ বাসে চড়ে নারায়ণগঞ্জের মোর্গাপাড়া চৌরাস্তা নেমে সিএনজি বা রিক্সায় করে শ্রী শ্রী লোকনাথ বারদী লোকনাথ আশ্রমে পৌঁছে যাবেন।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি ঘুরতে যাওয়ার জন্য কেমন জায়গা ?

এককালের দাপুটে জমিদারের বসবাসের বাসাগুলো বর্তমানে প্রত্নতত্ব নিদর্শন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এইসব জমিদার বাড়ির মধ্যে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি উল্লেখযোগ্য। ৬২ বিঘা জমির উপর ৯৫ টি কক্ষ নিয়ে এই জমিদার বাড়িটি তৈরী হয়েছিল। বর্তমানে এই বাড়িটি কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু দর্শনার্থীরা দেখার জন্য যেতে পারে যেকোনো সময়।

ঢাকার যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান ও সায়েদাবাদ থেকে (মেঘলা, আসিয়ান ও গ্লোরি) বাসে উঠে ভুলতা বা রূপসা বাস স্ট্যান্ডে যেতে হবে। সেখান থেকে রিক্সা বা সিএনজি দিয়ে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি চলে যেতে পারবেন।

ভাষা আন্দোলন জাদুঘর কোথায় অবস্থিত এবং কিভাবে যেতে হয় ?

১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এবং শফিউর সহ নাম না জানা অনেক ব্যক্তি শহীদ হন। তাদের স্মৃতি চরণ ধরে রাখার জন্য ২০১০ সালে বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের দ্বিতীয় তলায় ভাষা আন্দোলন জাদুঘর উদ্ভোদন করা হয়। এই জাদুঘরে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের ব্যবহৃত জিনিস যত্ন সহকারে রাখা হয়েছে, এবং দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনি শাহবাগ আসতে পারবেন। শাহবাগ থেকে হেটে আপনি ভাষা আন্দোলন জাদুঘরে যেতে পারবেন।

বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি কোথায় এবং কিভাবে যাবো ?

তুরাগ নদীর তীরবর্তী এলাকার ছোট্ট একটি গ্রামের নাম বিরুলিয়া। এই গ্রামে দশ টিরো বেশি স্থাপনা রয়েছে, যার জন্য বিরুলিয়া এলাকা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্ৰত্যেকদিন অনেক পর্যটক এই এলাকায় ঘুরতে আসে। বিরুলিয়া গ্রামে সবচাইতে জনপ্রিয় হচ্ছে বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি। বর্তমানে এই জমিদার বাড়িতে বাড়ির ওয়ারিশ গণ বসবাস করে।

এই বাড়িতে যদি ঘুরতে যেতে চান তাহলে আপনি মিরপুর-১ হতে আলিফ কিংবা মোহনা পরিবহনের বাসে উঠে বিরুলিয়া ব্রীজে নামবেন সেখান থেকে ২০ টাকা অটো রিক্সা ভাড়া দিয়ে পৌঁছে যাবেন বিরুলিয়া জমিদার বাড়িতে।এছাড়া, নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করে পৌঁছে যেতে পারবেন বিরুলিয়া জমিদার বাড়িতে।

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একদিনের জন্য শিক্ষা সফরের জন্য কোন জায়গা ভালো হবে ?

আমার মতে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর খুবই ভালো। এইখানে এসে ছাত্র-ছাত্রীরা মুক্তিযুদ্ধ সমন্ধে অনেক কিছু জানতে পারবে এবং মুক্তি যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত দুর্লভ জিনিস গুলো দেখতে পারবে।

১৯৯৬ সালের ২২ শে মার্চ বেসরকারী উদোগ্যে এই জাদুঘরটি তৈরী হয়। পরে অসংখ্য মানুষের সহোযোগিতায় ১৫০০০ দুর্লভ জিনিস নিয়ে তৈরী হয়েছে এই জাদুঘর। ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল আড়াই বিঘা জমির উপর নতুন করে গড়ে উঠে মুক্তি যুদ্ধ জাদুঘর।

আপনি চাইলে সিএনজি, ট্যাক্সি অথবা বাস দিয়ে আগারগাঁও পৌঁছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে যেতে পারবেন।

এক দিনের ভ্রমণের জন্য মৈনট ঘাট কেমন ?

মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিত মৈনট ঘাট দোহার উপজেলায় অবস্থিত। ১ দিনের মধ্যে ঘুরে আসা যায়, তাই এইখানে পর্যটকদের মাঝে এর জনপ্রিয়তা বেশী। মৈনট     ঘাটে আপনি অপূর্ব সূর্য অস্ত যাওয়া দেখতে পারবেন।ট্রলার অথবা স্পিড বোড দিয়ে আপনি পদ্মা নদী তে ঘুরতে পারবেন।

ঢাকার গুলিস্তান থেকে অনেক বাস দোহার যায় কিন্তু মৈনট ঘাট যায় না। শুধুমাত্র যমুনা ডিলাক্স পরিবহনের বাস মৈনট ঘাট যায়। আর যদি আপনি ঢাকা আস্তে চান তাহলে সন্ধ্যা ৬ টার আগে মৈনট ঘাটের বাস স্ট্যান্ডে উপস্থিত থাকতে হবে।

ঢাকার ৩০০ ফিটের নকশিপল্লী

সুন্দর একটি বিকেল কাটানোর জন্য ঢাকার ৩০০ ফিটে গড়ে উঠেছে নকশিপল্লী। এর গ্রামীণ পরিবেশ যেমন, কাঠের রাস্তা, ছনের ঘর, টানা বারান্দা ও বসার স্থানে গ্রামের প্রতিছব্বি ফুটে উঠে। শরৎকালে কাশফুলের জন্য এর সৌন্দর্য আরো বেড়ে যায়।আপনি চাইলে আপনার যেকোনো প্রোগ্রামের জন্য ভাড়া নিতে পারবেন। কারণ, নকশিপল্লী মূলত একটি রেস্টুরেন্ট।

ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে প্রথমে আসতে হবে ৩০০ ফিট। সেখান থেকে পূর্বাচল যাওয়ার রাস্তা ধরে বোয়ালিয়া ও বালু ব্রীজ পার হয়ে ডান দিকের রাস্তা ধরে ভোলানাথপুর কবরস্থানের রাস্তার কিছুটা ভিতরে অবস্হিত অথবা কাউকে জিজ্ঞাসা করলে দেখিয়ে দিবে নকশিপল্লী কোথায় অবস্থিত।

বাংলাদেশের ১০ টি ঝর্ণা ও জলপ্রপাতের নাম ?

আগে আমরা ঝর্ণা বলতে শুধুমাত্র মাধবকুন্ড ঝর্ণা কে চিনতাম। কিন্তু বর্তমানে আরো কিছু ঝর্ণা ও জলপ্রপাত আবিষ্কার হয়েছে, যেই গুলো চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড, মিরসরাই, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি অবস্থিত। এছাড়া, সিলেটে ঝর্ণা ছিল। নিম্নে ঝর্ণা গুলোর নাম দেওয়া হলো:

  • তিনাপ সাইতার।
  • নাফাখুম।
  • ধূমপানি ঝর্ণা।
  • অমিয়াখুম।
  • সাইংপ্রা ঝর্ণা।
  • বাকলাই ঝর্ণা।
  • জাদিপাই ঝর্ণা।
  • খৈয়াছড়া ঝর্ণা।
  • দামতুয়া ঝর্ণা।
  • হামহাম ঝর্ণা।

এই ঝর্ণার ব্যাপারে আরো জানতে চাইলে আপনি ইউটুবে সার্চ করে জানতে পারেন।

ভাওয়াল রাজবাড়ী ও ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী ঘুরার জন্য কেমন ?

ভাওয়াল রাজবাড়ী ও ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে অবস্থিত। এই ২ টি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। তাই যারা ইতিহাস পছন্দ করেন, তাদের জন্য আদর্শ জায়গা।

ভাওয়াল রাজবাড়ী গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর অবস্থিত, এই রাজবাড়িটি ৫ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে।ভাওয়াল রাজবাড়ীতে মোট ৩৬৫ টি রুম রয়েছে, এবং রাজবাড়ীর বিভিন্ন অংশের নাম আছে।রাজবাড়ীর পশ্চিম দিকে রয়েছে বিশাল দীঘি ও সামনে বিস্তৃত সমতল মাঠ।

ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে অবস্থিত। ইহা একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। তাই যারা ইতিহাস পছন্দ করেন, তাদের জন্য আদর্শ জায়গা। ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী মূলত হিন্দু জমিদার পরিবারের সদস্যদের শবদাহ সৎকারের জন্য ৫ একর জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয়। ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী ৬ স্তম্ভ বিশিষ্ট সৌধ ও একটি শিব মন্দির নিয়ে গঠিত।

ঢাকা থেকে গাজীপুর গামী বাসে উঠে শিববাড়ি পৌঁছে রিক্সা দিয়ে যেতে পারবেন ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী ও ভাওয়াল রাজবাড়ী।আর যদি দূর থেকে আসেন তাহলে আপনি হোটেল ভাড়া নিয়ে রাত্রি যাপন করতে পারেন।

ভ্রমনের জন্য নুহাশ পল্লী কেমন জায়গা ?

গাজীপুর সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত নুহাশ পল্লী। আমার মতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক দিয়ে নুহাশ পল্লী খুবই সুন্দর। ১৯৮৭ সালে ২২ বিঘা জমিতে হুমায়ুন আহাম্মেদ নুহাশ পল্লী তৈরী করে।

নুহাশ পল্লীতে প্রায় সময় নাটকের শুটিং অথবা সিনেমার শুটিং হয়ে থাকে। নুহাশ পল্লীতে প্রবেশ করলেই প্রথমে দেখতে পারবেন আসাদুজ্জামান খানের “মা ও শিশু ভাস্কর্য ” দেখতে পারবেন। শিশুদের বিনোদনের জন্য তৈরী করা হয়েছে ভুত ও ব্যাঙের ভাস্কর্য। এর পাশেই তৈরী করা হয়েছে আঁকাবাঁকা সুইমিং পুল। সুইমিং পুল পেরিয়ে সামনে গেলে দেখতে পারবেন হুমায়ুন আহাম্মেদের কটেজ, দাবা খেলার ঘর, নামাজ পড়ার স্থান ও তার বিখ্যাত ট্রি হাউস।এছাড়া, ৩০০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগ ঔষধি গাছ।

আপনি চাইলে নুহাশ পল্লীতে একদিনের মধ্যে ঘুরে আস্তে পারবেন। নুহাশ পল্লীতে যেতে হলে প্রথমে গাজীপুরের হোতাপাড়া বাস স্ট্যান্ডে যেতে হবে। তারপর, হোতাপাড়া থেকে রিক্সা, সিএনজি অথবা টেম্পু দিয়ে যেতে হবে।