কেউ যদি আমাকে গালি-গালাজ করে, তাহলে কি তার নামে মামলা করা যাই কিনা ?

কেউ যদি আপনাকে সামনা-সামনি গালি দেয় অথবা আপনাকে মোবাইল ফোন এর মাধম্যে গালি-গালাচ করে, এর ফলে যদি আপনি মনে করেন আপনার ম্যান হানি হয়েছে তাহলে আপনি উক্ত ব্যাক্তির নাম মামলা করতে পারবেন।

১৮৬০ সালের ফৌজদারি আইনের ৪৯৯ এবং ৫০০ নং ধারা অনুসারে আপনাকে যে গালি দিয়েছে তার সর্বোচ্চ ২ বছর পয্ন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানা হতে পারে।কিন্তু এই মামলা করার জন্য আপনার অবশ্যয় তৃতীয় ব্যক্তির রেফার প্রয়োজন হবে অন্যথায় আপনি মামলা করতে পারবেন না।

পুলিশ থানায় মামলা না নিলে আদালতে কিভাবে মামলা করব ?

প্রথমে আপনি বুঝার চেষ্টা করুন যে আপনার মামলার ধরণ কোনটা। যেমন, দায়রা মামলা নাকি ফৌজদারি মামলা।

দায়রা মামলা হলে আপনি কোনো বিজ্ঞ উকিলের শরণাপন্ন হন। উকিল আপনাকে কিভাবে মামলা করতে হবে এই বিষয়ে সাহায্য করবে।

ফৌজদারি মামলা হলে আপনাকে কোনো ম্যাজিস্টেটের শরণাপন্ন হতে হবে। যদি মেজিস্ট্যাটের মনে হয় মামলাটি আমলে নেওয়া যায় তাহলে আপনি মামলা করতে পারবেন।

বাংলাদেশে প্রশ্নপত্র ফাঁস দমনে কোনো আইন আছে কি ?

১৯৮০ ও ১৯৯২ সালের সংশোধনীর ৪ নম্বর ধারা অনুসারে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী অপরাধী কে ৩-১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। বর্তমানে এই অপরাধ বেশি সংগঠিত হচ্ছে তাই পুলিশ এখন বেশি তৎপর এই অপরাধ দমন করার জন্য। তাই এই জঘন্য অপরাধ করা থেকে বিরত থাকুন।

বাংলাদেশে এমন কোন আইন আছে, যে আইন সমন্ধে জনগণ খুব কমই জানে ?

আমার জানা মতে, ১৯১৯ সালের একটা আইন যা হলো “কিশোর ধূমপায়ী আইন” এখনো বলবৎ আছে।

এই আইন অনুযায়ী যদি কোনো ১৬ বছর বা ১৬ বছরের নিচের কোনো ব্যাক্তির কাছে ধূমপান জাতীয় দ্ৰব্য বিক্রি করলে ১০ টাকা জরিমানা এবং দ্বিতীয় বার বিক্রি করলে ২০ টাকা জরিমানা।

পুলিশ যদি ১৬ বছর বা ১৬ বছরের নিচের কোনো ব্যক্তির নিকট ধূমপান জাতীয় দ্রব্য পায় তাহলে তা সিজ বা নষ্ট করে দিতে পারবে।

বাংলাদেশের আইন অনুসারে কোন অপরাধগুলো সবচেয়ে মারাত্মক ?

বাংলদেশের আইনানুসারে যে অপরাধ বেশি মারাত্মক সেই অপরাধের অবশ্যই সর্বোচ্চ সাজা হয় মৃত্যুদণ্ড।নিম্নে অপরাধ গুলো এবং এর সাজসমূহ তুলে ধরা হলো-

  • বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া বা সহায়তা করা।(১২১ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)
  • বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা বা সহায়তা করা।(১৩২ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)
  • মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার ফলে কারো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে।(১৯৪ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)
  • খুন করলে। (৩০২ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)
  • যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দন্ডিত ব্যাক্তি কাউকে খুন করলে।(৩০৩ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)
  • কোন ব্যক্তিকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে আন্তহত্যা করলে।(৩০৫ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)
  • এসিড জাতীয় পদার্থ দিয়ে কোন ব্যক্তিকে গুরুতর জখম করলে।(৩২৬ক ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)
  • দশ বৎসরের নিচের কোন ব্যক্তিকে কোনো প্রকার ক্ষতি করলে।(৩৬৪ক ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)
  • খুনসহ ডাকাতি করলে।(৩৯৬ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড)

হয়রানী মামলা থেকে রেহাই পেতে হলে কি করতে হবে ?

মূলত হয়রানি মামলা বলতে কোনো মামলা বাংলাদেশে নাই। কিন্তু বর্তমানে অনেক মানুষ মিথ্যা মামলায় জেল খাটছে অথবা আদালতে সময় মতো হাজিরা দিচ্ছে। আমার অভিজ্ঞতায় আমি একজন কে দেখেছি যে ৩-৪ তা মামলার আসামি কিন্তু আদালতে কোনো কিছু প্রমান হয় না। কারণ, মামলার বাদী এবং উকিল থাকে না।তাই আপনি যদি এমন মামলার সম্মুখীন হন তাহলে সাথে সাথে বিজ্ঞ উকিলের শরণাপন্ন হন।এবং তার মাধম্মে আপনি আপনার মামলা আদালতে পরিচালনা করুন।

বাংলাদেশের আইনে লিভ টুগেদার কি বৈধ?

১৯৬০ সালের ৪৯৭ নং ধারা অনুযায়ী লিভ টুগেদার কে ব্যভিচার অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা অথবা উভয়দন্ড হতে পারে। এবং পুলিশ তাদের গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবে।এছাড়া, যদি কোনো পুরুষ বা মহিলা প্রকাশ্যে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয় হয় বা হওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তারা ২৯০ নং ধারা অনুসারে আসামি।

পরকীয়া কি অপরাধ ?

পরকীয়া নিয়ে বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৯৭ ধারায় ব্যভিচারের শাস্তি নিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।যদি আপনি কোনো বিবাহিত মহিলার সাথে তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হন, তাহলে তা ধর্ষণ বলে বিবেচিত না হলেও ব্যাভিচার হিসেবে গণ্য হবে।যার শাস্তি সর্বোচ্চ ৭ বছর বা এর কম মেয়াদে বিনাশ্রমে কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

ছাত্রের নামে ফৌজদারি মামলা থাকলে বি.সি.এস দেওয়া যাবে কিনা ?

আপনার নামে ফৌজদারি মামলা থাকে, কিন্তু গ্রেফতারি পরওয়ানা না থাকে তাহলে আপনি বি.সি.এস পরীক্ষা (লিখিত ও মৌখিক) দিতে পারবেন। কিন্তু যখন আপনার উপর পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে তখন আপনি অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।তাই নিজেকে অবৈধ কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। যাতে আপনার ভবিষ্যত নষ্ট না হয়।

মামলার বাদী মারা গেলে মামলা শেষ করার কোনো উপায় আছে কিনা ?

আপনি কোনোভাবেই মামলা শেষ করতে পারবেন না।যদি মামলার বাদী মারা যায় তাহলে তদন্তকারী অফিসার বাদীর পক্ষে এজাহারের বর্ণনা সাক্ষ্য হিসাবে বিবৃত করবেন। এরপর অন্যান্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণসহ যাবতীয় প্রসিডিংস শেষে মামলার রায় বিজ্ঞ আদালত দিবেন এবং মামলা শেষ করবেন।